Translate

শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬

অনিকেতের প্রতি - কবিতাগুচ্ছ

হারানো শব্দের আঘ্রাণ...

অনিকেত!নিযুত প্রত্নযুগ পেরিয়ে আজ বড় কবিতা পাচ্ছে!হ্যাঁ, আমার নাকি কবিতা পায়এমন-ই বলত আমার এক বান্ধবী,তখন আকাশে ঝলমলে কলেজবেলার রোদ্দুর... বাতাসে আকছার ভেসে আসতোহেমন্তের ছাতিমের মত তীব্র কবিতা-আঘ্রাণ,...আর আমি বুঁদ হয়ে যেতাম শব্দের খেলায়। ক্লাস শেষের ঘন্টা বাজতেযেমন ঝরে পড়া বকুল কুড়িয়েখেয়ালসুখে সাজায় কচিকাঁচার ঝাঁক।কুড়িয়ে গাঁথাতেই যার সার্থকতা, আমার কবিতা ছিল তেমনিইঝরা শব্দের খামখেয়ালি বিন্যাস!তার পর তো পায়ে পায়ে কত মেঘ-বৃষ্টির দেশ পেরিয়ে এলাম।ঝঞ্ঝা - ঘূর্ণি-র উথালপাতালে আমার বকুল-শব্দেরা কখন যেন হারিয়ে গেছিল...বিদ্যুৎ চমকের পরবর্তি নিকষ অন্ধকারে। আজ এই গর্ভিণী ক্ষেতের কিনারায়দিনশেষের কুয়াশালীন রোদ্দুরেআমায় ছুঁয়ে যাচ্ছেহারানো শব্দের অলৌকিক সুবাস!আমার বুকের মাঝে এখন নবান্নের আয়োজন;আঙুলে শব্দ মেখে আলপনা দিয়ে চলছি আনমনে! জানি এ ঘোর দীর্ঘস্থায়ী নয়।তবু এই এলোমেলো পায়ে আমি মেঠো আলপথেআরো কিছুকাল যেতে চাই!অনিকেত,যুগান্তর পেরিয়ে আজ বড্ড কবিতা পাচ্ছে,আজ আমায় ডেকোনা!


ডাক


এরকম  কতবার
ঘুমে ডোবা রাত্তিরের মাঝদরিয়ার
থেকে জেগে উঠে
আঙুলের আলতো ছোয়ায়
কথকতা স্রোত বয়ে চলে
ভোরের মোহনায়...

কে তোমাকে বলছে
অনিকেত
নদী নিম্নগামী?
ভালোবেসে তেমন করে ডাকলে
ঢেঊ আর আর বালিয়াড়ি  ফেলে
তোমার বুকেই বেজে উঠবে
জোয়ারের ছলছলানি।

তুমি বল অনিকেত
ক'জনাই বা তেমন করে ডাকতে জানি??


বিষণ্ণতার রং
অনিকেত, জানো বিষণ্ণতার একটা নিজস্ব রং আছে। হেমন্তী অপরাহ্ন, যখন কুয়াশাময় সন্ধ্যার সংগমে নিঃশব্দ সমর্পণে নিলীন তখন সোনালী শষ্যের সম্পদে সন্নত মাঠের কিনারায় অবসর মিললে একবারটি এসে দাঁড়িও আসন্ন বিরহ ব্যাথাতুর ভূমি তোমার সমস্ত চেতনায় বুলিয়ে দেবে মায়াময় বিষাদ বর্ণের প্রলেপ আজও কোন বহুজাতিক সংস্থার ক্যাটালগ তাকে বন্দী করতে পারেনি!!!

বুদ্বুদ

অনিকেত, আমি জানিভালোবাসার আশ্চর্যরঙ মুহূর্তগুলিএমন-ই পল দো পল কে সাথি
তার পর লীন হয়ে যাওয়া
আবছায়া অজানায়।
তবু ক্ষণস্থায়ী এই বুদ্বুদ সময়-ই
বাকি বেরঙ জিন্দেগি র
সফরের রেস্ত...
যেমন হেমন্তী সোনাভেজা শিশির
বৃষ্টিধোয়া আশমানে সাতরং ইন্দ্রধনু...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন